বাংলাদেশে শুধুমাত্র এইরকম লোকের পায়ের ধুলো নিতে ইচ্ছে করে

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও একদা সাইকেল চালিয়ে অফিসে গিয়েছিলেন। অচিরেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছিল সেটা ছিল আসলে ভড়ং কিংবা ভান। খালেদা-হাসিনাকেও মাঝে মাঝে গরিবের দুঃখে সমব্যথী হয়ে ‌‌'বিরল দৃষ্টান্ত' স্থাপন করতে দেখেছি। তাও ওই 'যে যায় লঙ্কায়...!' তবে খাঁটি মানুষও আছে এই দুঃখিনী বাংলাদেশে। সংখ্যায় কম, তবে তাদের জন্যই টিকে আছে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ছোট এই ভূখন্ড।

দৈনিক আমাদের সময়ে আজ একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। যাকে নিয়ে সেটি লেখা, বহু বছর ধরে সেই লোকটিকে দেখছি রয়ে গেছেন একইরকম- কোনো পরিবর্তন নেই। এইরকম লোকের পায়ের ধুলো নিতে ইচ্ছে করে আমার!

রিপোর্টটি পড়ুন-

অগ্নিকন্যাখ্যাত প্রবীন রাজনীতিক মতিয়া চৌধুরীর সততা ও নিরাভরণ জীবনের কথা কমবেশি সবারই জানা। ঘরের কাজ তো বটেই, কাঁচা বাজারটিও নিজেই করেন। মন্ত্রী হওয়ার পরও শত ব্যস্ততার মাঝে সুযোগ পেলেই চলে যান কোনো না কোনো কাঁচাবাজারে। যেমনটি গিয়েছিলেন গতকাল।

ঘড়ির কাঁটায় তখন পাঁচটা। ঘিঞ্জি, কর্দমাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত কাওরানবাজারে ঢুকে পড়লেন। প্রথমে পুরো বাজার হেঁটে কাঁচামরিচ থেকে শুরু করে আলু-পটল-আদা -পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম শুনলেন। তারপর নিজের ঘরের জন্য বাজার-সদাই করলেন। পাইকারি বাজারের পাশেই তিনি দেখলেন খর্বাকৃতির একজন মহিলা একডালি ভালো করলার পাশাপাশি আংশিক নষ্ট অর্থাৎ থেতলানো ও পচে যাওয়া করলার অংশ ছুরি দিয়ে কেটে ফেলে দিয়ে ছোট ছোট ভাগা দিয়ে বসে আছেন। স্বামী পরিত্যক্তা গাইবান্ধার এই মহিলার নাম রেনু। রেনুর কাছ থেকে এক ভাগা করলা দরাদরি করে ১২ টাকায় কিনে ব্যাগে ভরলেন। মতিয়া চৌধুরী ওই মহিলা দোকারদারকে ২০ টাকার নোট দিলেন। মহিলা দোকানদার পাশের পুরুষ দোকানদারকে ভাংতি দিয়ে সাহায্য করতে বললেন। পুরুষ দোকানদারটি খুচরা নাই বলে তা দিতে অস্বীকার করায় মহিলা দোকানদারটি পুরুষ দোকানদারটিকে ধমক দিয়ে বললেন, ‘দেস না, বেডিরে খাড়া করাই রাখছি।’ ঠিক তখনই পাশ দিয়ে এক ভদ্রমহিলা বাজার করে যাচ্ছিলেন। তিনি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে ‘বেডি’ বলায় মহিলা দোকারদারটিকে বললেন ‘বেয়াদব’। তুমি কি চেনো- উনি কে? তখন মতিয়া চৌধুরী ভদ্রমহিলাকে বললেন ‘থাক। ওরা অবুঝ।’

এবার মতিয়া গেলেন জালাল নামের এক আদা বিক্রেতার কাছে। সেখানে তিনি ভালো ও অপেক্ষাকৃত খারাপ আদার দাম জিজ্ঞেস করলেন। জবাবে দোকানদার জানালেন- ভালো আদা ৬০ টাকা এবং খারাপ আদার দাম ২৪ টাকা কেজি। তখন মতিয়া চৌধুরী ১২ টাকায় আধা কেজি খারাপ আদা কিনে ব্যাগে ভরলেন। এরপর চলে গেলেন লেবুর দোকানে। সেখানে গিয়ে দাম শুনে জানলেন- বড় সাইজের ভালো লেবুর হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। সেগুলো না কিনে মতিয়া চৌধুরী শহীদ মিয়া নামে এক দোকানদারের কাছ থেকে সবচেয়ে কমদামি লেবুর ডালি থেকে ১২ টাকা ডজন হিসেবে ১০ টাকায় ১০টি লেবু কিনলেন।

আমাদের সময়ের মূল প্রতিবেদন

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): motiya chowdhurymotia chowdhuryমতিয়া চৌধুরী ;

প্রথম প্রকাশ

Tags: ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply