শব্দপিডিয়া : সবচেয়ে কুৎসিত, সবচেয়ে শ্রুতিমধুর আর ইতিহাসের শব্দরাজি...

বৃক্ষ থেকে ঝরে পড়ে পাতা- কানে আসে মিষ্টি শব্দ। বৃষ্টি পড়ে- শব্দ হয়। নদীর স্রোত বয়ে যায়- শব্দ হয়। পাখি ডাকে- কানে আসে শব্দ। বাতাস বয়- শব্দ হয়। শব্দ শোনা যেন বিমূর্ত এক সঙ্গীত। শব্দেরও যেন প্রাণ আছে মানুষের মতোই। একেকটি শব্দের মধ্যে স্তব্ধ হয়ে থাকে একেক ধরনের কল্পনা, অভিজ্ঞতা আর ঘটনা। এমনিতে শব্দ যাযাবর- চিরকাল এক জায়গায় থাকে না, ঘোরে। ফলে শব্দের কোনো চরিত্র নেই। যার সঙ্গে যায়, সঙ্গে সঙ্গে তার হয়ে যায়!

বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত শব্দ
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানে বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত শব্দ নিয়ে একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হয় বছরতিনেক আগে। সেখানে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের প্রধান তিনটি কুৎসিত শব্দ হচ্ছে যথাক্রমে বমি করার শব্দ, মাইক্রোফোন ঠিকঠাক করার শব্দ এবং বাচ্চাদের বিলাপের শব্দ। এর বাইরে আরেকটি তালিকা পাবেন এইখানে, যদিও সেটা গবেষণালব্ধ তালিকা বলে মনে হয়নি।

সর্বকালের সেরা ১০ সম্মোহনজাগানো শব্দ
বিশ্বব্যাপী সম্মোহনজাগানো ১০টি শব্দের একটি তালিকা তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। তালিকায় অন্তর্ভুক্ত অনেকগুলো শব্দের ব্যাপারে সন্দিহান আমি। তবে সম্মোহনজাগানো প্রধান চারটি শব্দের তিনটির বেলায় দ্বিমত নেই। এই তিনটি শব্দ হচ্ছে- টেলিফোনের ভাইব্রেশনের শব্দ, শিশুদের খিলখিল হাসার শব্দ এবং এটিএম বা ব্যাংকের ক্যাশ রেজিস্টারের শব্দ

বিশ্বের সবচেয়ে শ্রুতিমধুর শব্দ
এক জরিপে বিশ্বের সবচেয়ে শ্রুতিমধুর শব্দের তালিকায় স্থান পেয়েছে সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দ, দীর্ঘশ্বাস, গাড়ি চলার শব্দ, বৃষ্টির শব্দ, ছোট নদীর প্রবাহের শব্দ, আর দীর্ঘ তালিকায় এমনকি অ্যাকুস্টিক গিটারের শব্দও।

পৃথিবীর বাইরের শব্দ
ঈগল অবতরণ করেছে- জানাচ্ছেন নীল আর্মস্ট্রং, চাঁদে যাওয়া প্রথম মানুষটি। মহাকাশযান ক্যাসিনির অভিযাত্রীরা শনি গ্রহের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এই শব্দ ধারণ করেছিলেন প্রায় তিরিশ বছর আগে। নাসার সৌজন্যে শুনুন নেপচুন গ্রহ, বৃহস্পতি আর ইউরেনাস গ্রহের শব্দ। হিউস্টন থেকে মহাকাশে উড়াল দেওয়ার পর মহাকাশযান অ্যাপোলোর নভোচারীরা পড়ে গিয়েছিল এক মহা সমস্যায়। সেই আর্তিই বন্দি হয়ে আছে এইখানে। এতো কিছুর পর ব্ল্যাকহোলের শব্দ শুনবেন না, তাও কি হয়! পৃথিবীর বাইরের আরো অনেক শব্দরাজির খোঁজ পাবেন নাসার আর্কাইভে

ইতিহাসের শব্দরাজি
নেলসন ম্যান্ডেলার সেই অবিস্মরণীয় শব্দমালা- 'সবার জন্য স্বাধীনতা' আজো অনুপ্রেরণা জোগায় পৃথিবীর মানুষকে। কে না শুনেছেন ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের ১৯১৮ সালের ভাষণ কিংবা মার্টিন কিং লুথারের সেই উচ্চারণ, আই হ্যাভ আ ড্রিম, যা বদলে দিয়েছিল পুরো আমেরিকাকে!
১৯৩২ সালের ১৫ জুলাই এডলফ হিটলারের সেই কন্ঠ ভীতি জাগায় আজো। হিটলারের প্রচারমন্ত্রী জোসেফ গোয়েবলসের নাম শোনেননি এমন লোক কমই থাকবে, এখানে শুনুন তার কন্ঠও
সবে আবিস্কার করেছেন বৈদ্যুতিক বাল্ব, সেটা নিয়েই বলছেন টমাস আলভা এডিসন। আর আলবার্ট আইনস্টাইন বলছেন তার সেই বিখ্যাত তত্ত্ব E=mc^2 নিয়ে। ওদিকে শান্তির বার্তা নিয়ে আমাদের মহাত্মা গান্ধী আছেন এইখানে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে দেওয়া অ্যাপলের বিগ বস স্টিভ জবসের অসাধারণ সেই বক্তৃতাই বা বাদ থাকবে কেন! অথবা ওসামা বিন লাদেন? লাদেনের সেই অডিও টেপ, যাতে তিনি ৯/১১-এ আল কায়েদার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছিলেন। আর ভুলি কী করে, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ভেসে আসা সেই অবিস্মরণীয় চরমপত্রের সম্মোহনজাগানো শব্দ!

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): addictive soundsaddictive soundbaby gigglephone vibratefavorite soundaudio clipssound clipscharampatra ;

প্রথম প্রকাশ

Tags: , ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply