বসুন্ধরা গ্রুপের অনলাইন বার্তা সংস্থা বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম
গতকাল একটি খবর প্রকাশ করে। শিরোনাম 'দুধ বেচতে ‘আইনস্টাইন’ প্রতারণা'।
আবুল খায়ের গ্রুপের মার্কস ব্রান্ডের গুঁড়োদুধ নিয়ে ঘরোয়া 'অনুসন্ধানী'
প্রতিবেদন সেটি। বিস্ময় জাগে মনে—যে বাংলানিউজের শীর্ষদেশে গত অন্তত এক বছর
ধরে আবুল খায়ের বিজ্ঞাপন ঝুলছে, তাদের বিরুদ্ধেই আলমগীর হোসেন সম্পাদিত
বাংলানিউজ হঠাৎ কেন অনুসন্ধানী হয়ে উঠল? বাংলানিউজের হোমপেজে একটু চোখ
বুলোতেই লক্ষ্য করলাম, আবুল খায়েরের সেই বিজ্ঞাপন আর নেই। ওয়েব আর্কাইভ
ঘেটে দেখলাম, গত ১২ মেতেও আবুল খায়েরের বিজ্ঞাপন
আলোকিত করছিল বাংলানিউজের পশ্চাৎদেশখানি। এখন তার বদলে ঠিক ওই স্থানে
'স্পেস ফর অ্যাডভার্টাইজমেন্ট' লেখা এক হৃদয়বিদারক আর্তি ঝুলছে দুটি মোবাইল
নম্বরসহ।
সংযুক্তি : আবুল খায়েরের বিজ্ঞাপনযুক্ত বাংলানিউজের হোমপেজ (ওয়েব আর্কাইভে)
বাইরে এক, ভেতরে অন্য
গুম হওয়া সেই সংবাদটি আমার চোখে পড়ে গতকাল রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে। রাত নয়টার দিকেও সেটি লিড আইটেম হিসেবেই ছিল বাংলানিউজের হোমপেজে। রাত ১১টার দিকে দেখি সেই সংবাদ আর কোথাও নেই! ব্রাউজারে সেইভ করা লিংকে ক্লিক করলে দেখাচ্ছে আরেকটি সংবাদ। গুগল সার্চ থেকে ক্লিক করলেও সেই একই কাণ্ড। শিরোনাম এক, কিন্তু ভেতরে আরেক খবর!
অনলাইনে কিছুই গুম করা যায় না
ইলিয়াস আলী গুমের ক্লু না থাকতে পারে, কিন্তু অনলাইনে কোনো না কোনো ক্লু থাকবেই। আবুল খায়ের গ্রুপের লাল সংকেতে বিজ্ঞাপন বন্ধ হলে 'অনুসন্ধানী নিউজ', আবার সবুজ সংকেতে সেই নিউজ গুম—ধামাচাপা দেওয়ার এই কাজটি অনলাইনে একটু কঠিনই। গুগলবট সেখানে সদাজাগ্রত। সার্চ করলে এখনো পাবেন গুম হওয়া সেই নিউজের শিরোনাম, সঙ্গে স্ক্রিনশট।
এমনিতে অনলাইনে নির্বিচার কপি-পেস্ট জলবৎ তরল ব্যাপার। অন্যায় যদিও, তবু এর সুবাদেই আরেকটি অনলাইন নিউজ সাইটে পাওয়া গেল সেই সংবাদের অবিকল প্রতিলিপি।
অনলাইনে অপসাংবাদিকতা
'নিউজ করছি-করবো' হুমকি দিয়ে অর্থকড়ি হাতিয়ে নেওয়া মফস্বলে তো বটেই, এমনকি এই ঢাকায়ও পরিচিত দৃশ্য ইদানিং। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেসব ঘটে লোকচক্ষুর অন্তরালে। কিন্তু বাংলানিউজ এবার একেবারে খোলা অনলাইনেই সেই কাজটি সম্পন্ন করলো। তাতে অপসাংবাদিকতার ইতিহাসে প্রধান সম্পাদক আলমগীর হোসেনের স্থানটি মোটামুটি পাকা হয়ে গেল। তবু নগদ নারায়ণে কাজ হলে তো ভালোই, নইলে নিশ্চয়ই আবারও বিজ্ঞাপন দিয়ে বাংলানিউজের অর্থকষ্ট দূর করতে এগিয়ে আসবে আবুল খায়ের গ্রুপ—এ প্রত্যাশা আমাদের সকলের!
যেমন ছিল গুম হওয়া সেই সংবাদটি
দুধ বেচতে ‘আইনস্টাইন’ প্রতারণা
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জনক অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের নাম ও ছবি নিয়ে আধুনিক প্রতারণায় নেমেছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের গ্রুপ। আইনস্টাইনের ছবি ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটি ‘মার্কস অ্যাকটিভ স্কুল’ গুড়ো দুধের বিজ্ঞাপন তৈরি করে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে। বিজ্ঞাপনটিতে বলা হচ্ছে, আইনস্টাইনের ছেলেবেলায় হেলথ ড্রিংক উদ্ভাবনই হয়নি। সে সময় নির্ভেজাল প্রাকৃতিক খাবার ছিল; এসবের একটিহচ্ছে গরুর খাঁটি দুধ। কৃত্রিম বা আর্টিফিসিয়াল হেলথ ড্রিংকস কখনই দুধের বিকল্প নয়।
আইনস্টাইনের মত একজন জগৎখ্যাত বিজ্ঞানীকে এভাবে অযৌক্তিকভাবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে প্রতারণামূলকভাবে ব্যবহার করাটা অনৈতিক ও অরুচিকর; এ নিয়ে সচেতন জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের মত অধিক জনবহুল দেশে এভাবে জগৎখ্যাত একজন বিজ্ঞানীর ছবি ব্যবহার করে এ ধরণের বিজ্ঞাপন প্রচার— সোজাকথায় বৃহৎ ভোক্তা শ্রেণীকে প্রতারণার নামান্তর বলে মনে করছেন তারা। বিজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, এখন খাঁটি তরল দুধ দুর্লভ। আর যা পাওয়া যায় তার থেকে অনেক প্রাকৃতিক উপাদান কেড়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু এই উক্তির সঙ্গে বাস্তবের অনেকাংশের মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
রাজধানীসহ দেশের প্রায় প্রধান সব জায়গায় এখনো গরুর খাঁটি তরল দুধ পাওয়া যাচ্ছে। দেশের বেশ কয়েকটি সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এই খাঁটি তরল দুধ উৎপাদনকারী থেকে নিয়ে ভোক্তা পর্যন্ত সংগ্রহ ও সরবরাহে নিয়োজিত। বিজ্ঞাপনে তরল দুধ থেকে প্রাকৃতিক উপাদান কেড়ে নেয়া হচ্ছে বলে মার্কস দাবি করেছে। অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুড়ো দুধ তৈরির ক্ষেত্রে দুধের প্রধান প্রধান প্রাকৃতিক উপদানগুলো একেবারেই নষ্ট হয়ে যায় এবং এই ধরণের উপাদানগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা কোনই কাজে আসে না। শিশুদের বিকাশে দুধের প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান বা নিউট্রিয়েন্টই যথেষ্ট বলে বিজ্ঞাপনে অভিজ্ঞ ডাক্তারের মত পরামর্শ দিয়েছে মার্কস। কিন্তু গণমাধ্যমে এধরণের প্রতারণামূলক প্রচার প্রকাশনা আইনবিরোধী বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত, মার্কস গুড়ো দুধে একাধিকবার মেলামিনের মতো বিষাক্ত রাসায়ানিক উপাদান মেশানোর অভিযোগ উঠেছিল। শুধু তাই নয়, মার্কস গুড়ো দুধের অধিকাংশ প্যাকেটের গায়ে বাজার মূল্য লেখা নেই বলেও বিভিন্ন সময় অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল মার্কেটে মার্কস গুড়োদুধ বিপণনকারী ২ ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছে।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, মার্কসের অধিকাংশ দুধের প্যাকেটের গায়েই বাজার মূল্য লেখা থাকে না। আমাদের পক্ষেও ওই ধরণের প্যাকেটে বাজার মূল্য লেখা সম্ভব হয় না। একারণে প্রায়ই ক্রেতাদের সামনে আমাদের বেকায়দায় পড়তে হয়। এ কারণে জরিমানাও গুনতে হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে।
দেশের অন্যতম বৃহৎ এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেশে গুড়ো দুধ সংকট সৃষ্টিরও অভিযোগ রয়েছে। এই সংকট সৃষ্টি করে প্রায়ই কোনো ধরণের নোটিস ছাড়াই মার্কস তাদের গুড়ো দুধের দাম ১০-২০ টাকা বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে ক্রেতা-ব্যবসায়ীরা জানান। এদিকে মার্কসের বিজ্ঞাপনে দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী বাজারে তরল দুধ দুর্লভ, আর যা পাওয়া যায় তা থেকে প্রাকৃতিক উপাদান কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মু. হাসিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এক অর্থে গরুর দুধ তো আসলে গরুর বাছুরের জন্য, এটা মানুষের জন্য নয়। এটাকে মানুষের পানের উপযোগী করতে হলে দু’টি কৌশলের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করতে হয়। প্রক্রিয়া দু’টির প্রথমটি হলো পাস্তুরাইজ করে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ামুক্ত করা আর দ্বিতীয়টি হলো দুধ থেকে ফ্যাট (চর্বি) কমানো। তিনি আরও বলেন, দুধ যদি ফুলক্রীম হয় তাহলে এটা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবে কিছুটা মাখন তুলে নেওয়া হলে তা মানুষের জন্য উপযোগী।
এভাবেই প্রক্রিয়াজাত করেই দেশের প্রধান দুগ্ধ উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে গরুর দুধ বিপণন করে থাকে। অর্থাৎ গুড়ো ও তরল দুধ সম্পর্কে মার্কসের বায়বীয় দাবি একেবারেই অযৌক্তিক।
আবুল খায়ের গ্রুপের মত আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের সঙ্গে এরকম প্রতারণা করে ব্যবসা করছে। এনিয়ে বাংলানিউজের অনুসন্ধান চলছে। শিগগিরই আরো নতুন নতুন তথ্য পাঠকদের জানানো হবে।
ফুটনোট
অনলাইনে লেজ লুকোনো আসলেই কঠিন!
বাইরে এক, ভেতরে অন্য
গুম হওয়া সেই সংবাদটি আমার চোখে পড়ে গতকাল রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে। রাত নয়টার দিকেও সেটি লিড আইটেম হিসেবেই ছিল বাংলানিউজের হোমপেজে। রাত ১১টার দিকে দেখি সেই সংবাদ আর কোথাও নেই! ব্রাউজারে সেইভ করা লিংকে ক্লিক করলে দেখাচ্ছে আরেকটি সংবাদ। গুগল সার্চ থেকে ক্লিক করলেও সেই একই কাণ্ড। শিরোনাম এক, কিন্তু ভেতরে আরেক খবর!
অনলাইনে কিছুই গুম করা যায় না
ইলিয়াস আলী গুমের ক্লু না থাকতে পারে, কিন্তু অনলাইনে কোনো না কোনো ক্লু থাকবেই। আবুল খায়ের গ্রুপের লাল সংকেতে বিজ্ঞাপন বন্ধ হলে 'অনুসন্ধানী নিউজ', আবার সবুজ সংকেতে সেই নিউজ গুম—ধামাচাপা দেওয়ার এই কাজটি অনলাইনে একটু কঠিনই। গুগলবট সেখানে সদাজাগ্রত। সার্চ করলে এখনো পাবেন গুম হওয়া সেই নিউজের শিরোনাম, সঙ্গে স্ক্রিনশট।
এমনিতে অনলাইনে নির্বিচার কপি-পেস্ট জলবৎ তরল ব্যাপার। অন্যায় যদিও, তবু এর সুবাদেই আরেকটি অনলাইন নিউজ সাইটে পাওয়া গেল সেই সংবাদের অবিকল প্রতিলিপি।
অনলাইনে অপসাংবাদিকতা
'নিউজ করছি-করবো' হুমকি দিয়ে অর্থকড়ি হাতিয়ে নেওয়া মফস্বলে তো বটেই, এমনকি এই ঢাকায়ও পরিচিত দৃশ্য ইদানিং। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেসব ঘটে লোকচক্ষুর অন্তরালে। কিন্তু বাংলানিউজ এবার একেবারে খোলা অনলাইনেই সেই কাজটি সম্পন্ন করলো। তাতে অপসাংবাদিকতার ইতিহাসে প্রধান সম্পাদক আলমগীর হোসেনের স্থানটি মোটামুটি পাকা হয়ে গেল। তবু নগদ নারায়ণে কাজ হলে তো ভালোই, নইলে নিশ্চয়ই আবারও বিজ্ঞাপন দিয়ে বাংলানিউজের অর্থকষ্ট দূর করতে এগিয়ে আসবে আবুল খায়ের গ্রুপ—এ প্রত্যাশা আমাদের সকলের!
যেমন ছিল গুম হওয়া সেই সংবাদটি
দুধ বেচতে ‘আইনস্টাইন’ প্রতারণা
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জনক অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের নাম ও ছবি নিয়ে আধুনিক প্রতারণায় নেমেছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের গ্রুপ। আইনস্টাইনের ছবি ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটি ‘মার্কস অ্যাকটিভ স্কুল’ গুড়ো দুধের বিজ্ঞাপন তৈরি করে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে। বিজ্ঞাপনটিতে বলা হচ্ছে, আইনস্টাইনের ছেলেবেলায় হেলথ ড্রিংক উদ্ভাবনই হয়নি। সে সময় নির্ভেজাল প্রাকৃতিক খাবার ছিল; এসবের একটিহচ্ছে গরুর খাঁটি দুধ। কৃত্রিম বা আর্টিফিসিয়াল হেলথ ড্রিংকস কখনই দুধের বিকল্প নয়।
আইনস্টাইনের মত একজন জগৎখ্যাত বিজ্ঞানীকে এভাবে অযৌক্তিকভাবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে প্রতারণামূলকভাবে ব্যবহার করাটা অনৈতিক ও অরুচিকর; এ নিয়ে সচেতন জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের মত অধিক জনবহুল দেশে এভাবে জগৎখ্যাত একজন বিজ্ঞানীর ছবি ব্যবহার করে এ ধরণের বিজ্ঞাপন প্রচার— সোজাকথায় বৃহৎ ভোক্তা শ্রেণীকে প্রতারণার নামান্তর বলে মনে করছেন তারা। বিজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, এখন খাঁটি তরল দুধ দুর্লভ। আর যা পাওয়া যায় তার থেকে অনেক প্রাকৃতিক উপাদান কেড়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু এই উক্তির সঙ্গে বাস্তবের অনেকাংশের মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
রাজধানীসহ দেশের প্রায় প্রধান সব জায়গায় এখনো গরুর খাঁটি তরল দুধ পাওয়া যাচ্ছে। দেশের বেশ কয়েকটি সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এই খাঁটি তরল দুধ উৎপাদনকারী থেকে নিয়ে ভোক্তা পর্যন্ত সংগ্রহ ও সরবরাহে নিয়োজিত। বিজ্ঞাপনে তরল দুধ থেকে প্রাকৃতিক উপাদান কেড়ে নেয়া হচ্ছে বলে মার্কস দাবি করেছে। অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুড়ো দুধ তৈরির ক্ষেত্রে দুধের প্রধান প্রধান প্রাকৃতিক উপদানগুলো একেবারেই নষ্ট হয়ে যায় এবং এই ধরণের উপাদানগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা কোনই কাজে আসে না। শিশুদের বিকাশে দুধের প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান বা নিউট্রিয়েন্টই যথেষ্ট বলে বিজ্ঞাপনে অভিজ্ঞ ডাক্তারের মত পরামর্শ দিয়েছে মার্কস। কিন্তু গণমাধ্যমে এধরণের প্রতারণামূলক প্রচার প্রকাশনা আইনবিরোধী বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত, মার্কস গুড়ো দুধে একাধিকবার মেলামিনের মতো বিষাক্ত রাসায়ানিক উপাদান মেশানোর অভিযোগ উঠেছিল। শুধু তাই নয়, মার্কস গুড়ো দুধের অধিকাংশ প্যাকেটের গায়ে বাজার মূল্য লেখা নেই বলেও বিভিন্ন সময় অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল মার্কেটে মার্কস গুড়োদুধ বিপণনকারী ২ ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছে।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, মার্কসের অধিকাংশ দুধের প্যাকেটের গায়েই বাজার মূল্য লেখা থাকে না। আমাদের পক্ষেও ওই ধরণের প্যাকেটে বাজার মূল্য লেখা সম্ভব হয় না। একারণে প্রায়ই ক্রেতাদের সামনে আমাদের বেকায়দায় পড়তে হয়। এ কারণে জরিমানাও গুনতে হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে।
দেশের অন্যতম বৃহৎ এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেশে গুড়ো দুধ সংকট সৃষ্টিরও অভিযোগ রয়েছে। এই সংকট সৃষ্টি করে প্রায়ই কোনো ধরণের নোটিস ছাড়াই মার্কস তাদের গুড়ো দুধের দাম ১০-২০ টাকা বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে ক্রেতা-ব্যবসায়ীরা জানান। এদিকে মার্কসের বিজ্ঞাপনে দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী বাজারে তরল দুধ দুর্লভ, আর যা পাওয়া যায় তা থেকে প্রাকৃতিক উপাদান কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মু. হাসিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এক অর্থে গরুর দুধ তো আসলে গরুর বাছুরের জন্য, এটা মানুষের জন্য নয়। এটাকে মানুষের পানের উপযোগী করতে হলে দু’টি কৌশলের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করতে হয়। প্রক্রিয়া দু’টির প্রথমটি হলো পাস্তুরাইজ করে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ামুক্ত করা আর দ্বিতীয়টি হলো দুধ থেকে ফ্যাট (চর্বি) কমানো। তিনি আরও বলেন, দুধ যদি ফুলক্রীম হয় তাহলে এটা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবে কিছুটা মাখন তুলে নেওয়া হলে তা মানুষের জন্য উপযোগী।
এভাবেই প্রক্রিয়াজাত করেই দেশের প্রধান দুগ্ধ উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে গরুর দুধ বিপণন করে থাকে। অর্থাৎ গুড়ো ও তরল দুধ সম্পর্কে মার্কসের বায়বীয় দাবি একেবারেই অযৌক্তিক।
আবুল খায়ের গ্রুপের মত আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের সঙ্গে এরকম প্রতারণা করে ব্যবসা করছে। এনিয়ে বাংলানিউজের অনুসন্ধান চলছে। শিগগিরই আরো নতুন নতুন তথ্য পাঠকদের জানানো হবে।
ফুটনোট
অনলাইনে লেজ লুকোনো আসলেই কঠিন!
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ এ ১২:৫৬ AM
দেশ বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল তথ্য ও পরামর্শ বাংলায়