আদালতের বিচারকরা নিজেরাই উচ্চকণ্ঠ হলে ভালো দেখায় না

জীবনে যিনি এক ওয়াক্ত নামাজ পড়েছেন কিনা সন্দেহ, তিনিও এখন শোকরানা আদায় করতে করতে বেহুঁশ হওয়ার জোগাড়। মসজিদ ছাড়িয়ে উপাসনালয়গুলোতে হচ্ছে স্পেশাল প্রার্থনা। (প্রার্থনাও আবার দুরকম হয় নাকি!) মোটামুটি হুলস্থূল অবস্থা। সাজ সাজ রব চারদিকে। আকামকুল শিরোমনি এরশাদের পর্যন্ত গলা ধরে আসছে এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে। আর একেবারে বিচারের দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনই বোধহয় সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে একেবারে 'রিয়েল টাইমে' কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি।
বিচারকই বা বাদ থাকবেন কেন! দেশটিভির মারফতে আমরা দেখলাম বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে রায় প্রদানকারী বিচারক কাজী গোলাম রসুলও লাইমলাইট থেকে বাদ থাকতে চাইছেন না। বিচারক কাজী গোলাম রসুল বলেছেন, ‌'আমাকে বিচার বিলম্বিত করার জন্য বহুবার বিশেষ মহল থেকে হত্যার হুমকি পর্যন্ত দেয়া হয়েছিলো।' শেষ পর্যন্ত বিচারকাজ সম্পন্ন হওয়ায় তিনি সন্তুষ্টিও প্রকাশ করেছেন এবং তার কর্মজীবনে নানা রায়ের মধ্যে এই রায়কে সেরা সাফল্য হিসেবে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমার ওপর একটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল তখন। আমি মনে মনে ঠিক করেছিলাম, যে কোনো কিছুর বিনিময়ে দায়িত্বটা যথাসাধ্য পালন করতে চেষ্টা করব। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে সে অর্পিত দায়িত্ব আমি পালন করেছি। এর মধ্যে আমার সিনসিরিয়াটি ছিল, নিরপেক্ষতা ছিল শতভাগ।
রায়ের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, সত্যি বলতে আমার মধ্যে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। আমিও তো মানুষ। একদিকে আমার কলমের খোঁচায় ১২জনের(একজন মৃত) ফাঁসির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। অপরদিকে একটি জঘন্য বর্বরোচিত হত্যার সঠিক বিচার করতে পেরেছি। এটা আমার কর্মজীবনের একটি বড় সাফল্য।

বিচারকের চিরাচরিত ভাবমূর্তি ভেঙে বিচারক কাজী গোলাম রসুল একটু কি বাইরে বেরিয়ে আসলেন? নাকি অন্য সবার মতো কৃতিত্ব দেখাতে চাইছেন? নাকি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন? আদালতের বিচারকরা অন্দরে থাকবেন- সেটাই আমাদের কাছে প্রত্যাশিত। তারা নিজেরাই উচ্চকণ্ঠ হলে ব্যাপারটা ভালো দেখায় না।

এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট

Tags: , ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply