আলমিরায় 'আনডু' সুবিধা এবং ফাইল ক্যাবিনেটে গুগলিংয়ের কাতর প্রতীক্ষা!

বিয়েতে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলাম। সদ্য লন্ড্রি থেকে আনা শার্টটা গায়ে দিয়েই মনে হল প্যান্টের রঙের সঙ্গে ওটা মানাচ্ছে না। আরো দুটো শার্ট পরখ করলাম। মনের সঙ্গে মিলল না। তিনটা শার্ট বিছানায় তখন স্তূপ হয়ে পড়ে আছে। এর সরল অর্থ, নতুন করে ইস্ত্রি করতে হবে। ইস্ত্রি মানেই কাপড়ের বান্ডিল বগলে নিয়ে দোকানে যাওয়া, রসিদ নেওয়া, তারিখ মনে রেখে ফের ফেরত আনা। যুবসমাজ মাত্রই জানেন, এইসব কাজ কতো জটিল। তাছাড়া ধোপা স্টাইলে কাপড় ভাঁজ করাও কতোটা কঠিন কাজ। রুম থেকে বেরুতে বেরুতে শার্টগুলোর দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে এল ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস- আহা যদি একটা আনডু করার সুযোগ থাকতো! শ্রেফ একটা কন্ট্রোল+জেড! দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সদ্য ইস্ত্রিভাঙা শার্টগুলো আবার ফিরে পাবে আগের রূপ! অনেক অ্যাপ্লিকেশনেই আনডু কমান্ডের একটি সীমা থাকে। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে অনেকবার আনডু কমান্ড দিয়েও ফল পাওয়া যায়। আবার আমার প্রিয় কোয়ার্ক এক্সপ্রেস ফাইভে মাত্র এক কি দুবার দেওয়া যায়।

একবার কী এক কাজে একটি সনদের প্রয়োজন পড়ল। আতিপাতি করে খুঁজি এ ডেস্ক থেকে ও ডেস্ক। ফাইল ক্যাবিনেট ভর্তি হয়ে যাওয়ায় ইদানিং বইয়ের পাতার ফাঁকে ফাঁকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুঁজে রাখছি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রয়োজনীয় জিনিসটি খুঁজে পাওয়া সহজ কথা নয়। সেদিনও আমার মনে হল- আহা, আলমিরাতে যদি সার্চ সুবিধা থাকতো! গুগলের মতো দ্রুতগতির না হোক, উইন্ডোজ লাইভের মতো হলেও চলতো!
পরিচিত কারো এসব কথা শেয়ার করা মানেই শুধু শুধু ভ্রূকুটির শিকার হওয়া। কিন্তু আমি আশাবাদী, আসবেই আসবে এইদিন, না হয় আগামীদিনে। আমাজন ইলেকট্রনিক বই ছেড়েছে বাজারে। পেপারব্যাক আকারের ওই বই উল্টে উল্টে পড়া যায়। সার্চ সুবিধাও আছে। সনিরও এইরকম একটা ডিভাইস আছে দেখেছিলাম। তবে আপাতত আনডু সুবিধাসম্বলিত আলমিরা এবং সার্চের সুবিধাসম্পন্ন ফাইল ক্যাবিনেট চাই। সম্ভাবনাময় আরো যা কিছু হতে পারে সামনে, তার একটি ছোট্ট তালিকা নিচে দিলাম-
 
পণ্যের নাম : কি-বোর্ডের প্রিন্ট স্ক্রিন
সম্ভাব্য প্রস্তুতকারক : গ্রামীণ টেলিকম
মোবাইলের অ্যাটাচড ক্যামেরাটির বহুল ব্যবহার আসলে হয়ে থাকে পথে-ঘাটে-বসুন্ধরায় দেখা সুন্দরী মেয়েদের ছবি তোলায়। যদিও এখন মেয়েরাও সচেতন হয়ে উঠছে। মোবাইল ক্যামেরা হাতে উঠতে দেখলেই অনেকে মুখ ঘুরিয়ে ফেলে। অনেকে ক্রুদ্ধ চোখে তাকায়। তবে আমার মতে, ব্যবসা হল ব্যবসা। বাংলাদেশের আইনে আটকে যায় বলে ইউনিলিভার কিংবা ডিজুস বিশেষ অনুগ্রহ করে "বস্ত্রহরণ প্রতিযোগিতা"র আয়োজনটা করছে না। যদি না আটকাতো, তারা নিশ্চিত ওইটাও করতো। এবং অবশ্যই অবশ্যই চ্যানেল আই কিংবা এনটিভি এই কাজে মিডিয়া পার্টনার হতো।
সুতরাং, তরুণদের আগ্রহের কথা মাথায় রেখে প্রিন্ট স্ক্রিনের মতো পদ্ধতি চালু করা যেতে পারে। পথচলতি মেয়েদের ছবি তোলার কাজে ঝামেলামুক্ত এই পদ্ধতি নিঃসন্দেহে জনপ্রিয় হবে।

পণ্যের নাম : কন্ট্রোল+আর (রাগ)
সম্ভাব্য প্রস্তুতকারক : বেক্সিমকোখেলাপ ফার্মা
অনুরাগ ছাড়া যে কোনো অহেতুক রাগ দমনে এবং হারামজাতীয় উত্তেজনা দমনে এই কী কার্যকর ভূমিকা রাখবে। নিশ্চিত করে বলা যায়, সামহোয়্যারেই এই "কী" প্রচুর বিক্রি হবে। তাতে ব্লগে অহেতুক উত্তেজনা হ্রাস পাবে।

পণ্যের নাম : এফ-ফাইভ বা রিফ্রেশ কী
সম্ভাব্য প্রস্তুতকারক : ব্র্যাক ডেইরি ফার্ম
এই কী-টা মূলত এক্সিকিউটিভদের জন্য। অফিস-আদালতে দুপুরবেলা বা লাঞ্চ টাইমে এই কী-র ব্যবহারে খাবারের খরচটা সাশ্রয় হবে।

স্টার্ট মেন্যুর রান কমান্ড
সম্ভাব্য প্রস্তুতকারক : ড্যাফোডিল আইটি
এটি হতে পারে ডায়াবেটিসের রোগীদের মহৌষধ। রান কমান্ডে ক্লিক করে দৌড়ানোর কাজটি সারা অদূরভবিষ্যতে অসম্ভব কিছু নয়।

অল্টার
সম্ভাব্য প্রস্তুতকারক : মোস্তফা জব্বার কম্পিউটার্স
বঙ্গবাজারের পোশাক-আশাক অল্টার করার মতো ফালতু কাজে এই কী'র ব্যবহার হওয়া উচিত হবে না। ভাবছি, সম্ভাব্য কী হতে পারে। তবে এটি ব্যবহারে কঠোর কপিরাইট নীতিমালা মেনে চলতে হবে, তা মোটামুটি সুনিশ্চিত।
 
অ্যারো বা কাঠি কী
সম্ভাব্য প্রস্তুতকারক মোহাম্মদী অ্যাপারেলস এন্ড বায়িং
এই কী'র ব্যবহার কোথায়-কিসে, নিজ জ্ঞান ও বুদ্ধিতে বুঝে নিন। একমাত্র এই কী'টি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। সামহোয়্যারে ছাগুদমন এবং সাম্প্রতিক কলুদমনে এই কি'র চমৎকার প্রয়োগ হচ্ছে।

ইহা কোনো  পোস্ট নয়। 

Tags: , ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply