যৌন উন্মাদ এই লোকটি ব্লগেই থাকুক, অমানুষের উদাহরণ হয়ে...


গত কিছুদিন ধরেই দেখছিলাম, একের পর অশ্লীল ভাষায় পোস্ট দিয়ে যাচ্ছে এক লোক। সাময়িক ব্যান-জেনারেল হলে অনেকেই রাগ-ক্ষোভ নিয়ে পোস্ট দেন, কিন্তু এই লোকের পোস্ট ছিল মাত্রাছাড়ানো, চরম অশ্লীল, ভব্যতার সীমা ছাড়ানো। আমি তখন দেখেছি, অনেক ব্লগারই তার পোস্টগুলোর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করার বলছিলেন মন্তব্যে। পরে আর বিষয়টা খেয়াল করিনি। আজ হঠাৎ করে আরেকটা পোস্ট দেখে স্তব্ধ হয়ে গেলাম বিস্ময়ে। ব্লগারদের অনেকেই বিব্রত হবেন, তবু অসভ্যতার মাত্রা বোঝানোর জন্য দুটো লাইন তুলে দিচ্ছি-
সেফ যখন করলি, এখন তোদের চিফ জানার সাথে একটু লিলা খেলা করতে চাই। যেন তার লিলা খেলার তৃপ্তিতে ভবিষ্যতে কেউ আর আমারে জেনারেল কারার সাহস না পায়।

সামহোয়্যারের মডারেশন নিয়ে আমার নিজের মধ্যেও নানা অস্বস্তি আছে। কোনোটা বলি, কোনোটা হয়তো বলি না। অনেকেই এ নিয়ে পোস্ট দেন প্রায়ই। রাগ-ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই। সেটা স্বাভাবিকই। ভালোবাসা যেখানে আছে, রাগ-অভিমানও সেখানে থাকবেই। কিন্তু এ কেমন ভাষা? বস্তিতে অনাদরে বড়ো হওয়া কিশোরদের মুখেও তো এইরকম কুৎসিত ভাষা দেখা যায় না। আর ব্লগ তো পতিতালয় নয় যে, মাতাল ট্রাক ড্রাইভার অশ্রাব্য গালি দিয়ে আসন গেড়ে বসবেন!

বিকৃত এই লোকটি কে?
পেশায় দেখা যাচ্ছে লোকটি 'এডভোকেট'। পুরো ব্লগ জুড়ে নিজেই নিজের সুনাম গাওয়া আর স্বমেহন ছাড়া কিছু নেই। তবু পুরনো পোস্ট ঘেঁটে দেখলাম -নাম তার শাহনুর ইসলাম সৈকত। এই সূত্রে আরেক জায়গায় পেলাম আরো পরিচয় - নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যান রাইটস। ওদিকে বাংলাদেশ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেভেলপমেন্ট নামের একটি সংগঠনের একইসঙ্গে সেক্রেটারি জেনারেল ও নির্বাহী পরিচালকও। শুধু তাই নয়, এই লোক আবার নিজেকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এবং ঢাকা বার এসোসিয়েশনের সদস্য বলেও দাবি করছেন। ওয়েবসাইটেই পাওয়া গেল ইমেইল : saikotbihr@gmail.com আর ওয়েবসাইট : http://www.bihr-bihr.blogspot.com। সেখানেই ফোন নম্বরও পেলাম একটা- 01720308080। এই বিশিষ্ট জাস্টিসমেকারের প্রোফাইল পাওয়া যাবে এখানেও। আসলে বেশি খোঁজ নেওয়ার দরকারও পড়ে না। যে লোকের ভাষা এইরকম কুৎসিত, সেই লোক যে সংগঠনের পরিচালক হোক আর পিয়ন হোক, তার মান কেমন হবে সেটা সহজেই অনুমেয়। এক পোস্টে এই লোকটিকেই দেখা যাচ্ছে ইভটিজিং নিয়ে বেশ ভাবিত, ব্লগারদের সাহায্য চাইছে, সেই লোকই আবার আরেক পোস্টে যৌন উন্মাদ ইভটিজারের ভূমিকায়। বাস্তব জীবনে এই লোকই হয়তো বউ পেটায় নিয়ম করে, হয়তো তার বাসার কাজের মেয়েটাই তার অবাধ যৌনাচারের শিকার হচ্ছে প্রতিদিন, এই লোকই হয়তো অফিসে নারী সহকর্মীকে যৌন হয়রানি করে, আবার সেমিনার ডেকে এই লোকই মানবাধিকারের বুলি আওড়ায়। সমকামীদের নিয়েও তার আবার বিশেষ আগ্রহ

মতলববাজির কাহিনী
সাংবাদিকতা জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে জানি, মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া বাকি সবগুলোরই মূল কাজ হল থানায় থানায় দালালি করা, মানুষকে সাতপাঁচ দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করা, সংখ্যালঘু নির্যাতন-পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক কাহিনী-টাহিনী সাজিয়ে বিদেশ ভ্রমণ। বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠন সরকারি ভূমি দখলের সঙ্গেও জড়িত। এই লোক তাদেরই প্রতিনিধি। তার মতলববাজির কাহিনীও দেখলাম তার নিজের ওয়েবসাইটেই। মজার ব্যাপার, মানবাধিকার সংগঠনের এই গুণধর নির্বাহী পরিচালক নিজের ওয়েবসাইটে নিজেই রোগী সেজে বসে আছেন! বাংলা-টাংলায় নয়, একেবারে দেওয়ানী ইংরেজিতে লিখে রাখা হয়েছে কুৎসিত এই লোকের কথিত নির্যাতনের কাহিনী। পড়লেই বোঝা যায় যে পুরো বানোয়াট। তাও নিজের সম্পর্কে নিজেরই 'ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট'। কেন ওটা ইংরেজিতে লেখা? বাংলাদেশে কি ইংরেজিভাষী লোকের প্রাচূর্য ঘটেছে? না, এটা হল বিদেশী মানবাধিকার মদনদের দৃষ্টি আকর্ষণের গ্রাম্য চেষ্টা। প্রবাসী ব্লগার যারা, তারা জানবেন হয়তো এইরকম কাহিনী সাজিয়ে লাভ হয় দুটি - প্রথমত মুফতে বিদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ পাওয়া যায় সেমিনার-টেমিনারের অজুহাতে, দ্বিতীয়ত বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার একটি সুযোগ তৈরি হয়।

কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ এই কুৎসিত লোকটির কুরুচিপূর্ণ পোস্টগুলো মুছবেন না, কোনো পোস্ট মোছা হয়ে থাকলে সেগুলোও ফিরিয়ে আনুন, অমানুষের উদাহরণ হিসেবে বরং লোকটা ব্লগে থাকুক!


প্রথম প্রকাশ

Tags: ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply