সুবহানাল্লাহ, বাংলাদেশ এবার বিদেশে ব্যান্ডউইডথ বিক্রি করতে যাচ্ছে!

হাসবো কি কাঁদবো- ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। মনে হয় কাঁদতেই ইচ্ছে করছে। বাংলাদেশ, যেখানে একটুকু ব্যান্ডউইডথের জন্য মানুষ হাহাকার করছে, সেই বাংলাদেশ এবার বিদেশে ব্যান্ডউইডথ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তথ্যমতে, সাবমেরিন ক্যাবলের মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৩১ শতাংশ ব্যবহার করা হচ্ছে। আর বাকিটা নেপাল ও ভুটানে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নেপাল ও ভুটানে সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগ নেই। একসময় আমরা যা করতাম, নেপাল-ভুটানও সেই স্যাটেলাইট ব্যবহার করে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। সে কারণেই তারা বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইডথ কিনতে আগ্রহী। প্রসঙ্গত, আমাদের সাবমেরিন ক্যাবলের মোট ধারণক্ষমতা ২৪.১২ জিবিপিএস।

অথচ হায়, আমি নিজে ইউটিউব থেকে ৫-৬ মেগাবাইটের একটি ছোট্ট ভিডিও নামাতে, জিমেইলের স্ট্যান্ডার্ড ভার্সনটা লোড করতে গিয়ে মাথাকুটে মরি প্রতিদিন। স্লথগতির ইন্টারনেটের জন্য টুকটাক আউটসোর্সিং থেকে পর্যন্ত প্রত্যাখ্যাত প্রায়। ব্যান্ডউইডথের ছড়াছড়ির পরও স্বয়ং বিটিসিএল এই এখনো যে মূল্যে যে গতির ব্রডব্যান্ড সংযোগ দিচ্ছে, ডায়ালআপের জন্য যে চার্জ নিচ্ছে- ভাবতেই অবাক লাগে। যে দেশে ইন্টারনেট এখনো ব্যয়বহুল একটি সেবা, মাসে এক হাজার টাকা খরচ করেও যেখানে কিলোবাইটের ওপরে গতি উঠে না, সেই দেশ কিভাবে বেঁচে যাওয়া ব্যান্ডউইডথ বিক্রি করার মতো নির্লজ্জ হয়?

এই সেই সাবমেরিন ক্যাবল, যা একসময় বিনামূল্যে দেওয়া হলেও বাংলাদেশ তা নিতে সম্মত হয়নি দেশের গোপন তথ্য পাচার হয়ে যাওয়ার অজুহাতে। ফলে এই সাবমেরিন ক্যাবল কিংবা ব্যান্ডউইডথ নিয়ে তুঘলকি কারবার হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে রীতিমত ব্যান্ডউইডথ বিক্রি? এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই মাথামোটা আমলাদের মাথা থেকে বেরিয়েছে। আর মন্ত্রী-পাতিমন্ত্রীরা তাতে মাথা নেড়ে সায় দিয়েছেন। সাবমেরিন ক্যাবল তত্ত্বাবধানকারী সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবশ্য ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, এর ফলে নাকি কোনো সমস্যা হবে না। বরং দেশের আয় বাড়বে।

এইগুলারে আন্ডারওয়্যার পরিয়ে জাতীয় জাদুঘরে জীবন্ত সাজিয়ে রাখা উচিত। 

Tags: ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply