কাস্টমার কেয়ারের সুকন্ঠী ভদ্রমহিলা সেই গঁৎবাধা পরামর্শই দিলেন যথারীতি- আইটেমাইজড বিল বের করে নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আমি তাকে জানাই, টাকা মার গেছে। আপনি নিজেও বুঝতে পারছেন, গণ্ডগোল কিছু একটা হয়েছে। তাছাড়া আমার সময় নেই ম্যানেজারের কাছে ধর্না দেওয়ার। সবচেয়ে বড়ো কথা, এই মুহূর্তেই আমার ইন্টারনেট সংযোগ দরকার।
মেয়েটির কন্ঠে অপারগতা- তাহলে তো স্যার কিছুই করার নেই আমাদের।
আমার মেজাজ গেল চড়ে। আমি তাকে মুখের ওপর জানিয়ে দিলাম, গ্রামীণফোন হল ডাকাত। তারা গ্রাহকদের সঙ্গে ডাকাতিই করছে। মেয়েটি বলল, আপনি এতো বড়ো একটা কম্পানিকে ডাকাত বলছেন! আপনাকে এর প্রমাণ দিতে হবে। আমি বললাম, আমার নাম-ঠিকানা সবই আপনার চোখের সামনে। আমি দায়িত্ব নিয়ে গ্রামীণফোনকে ডাকাত বলছি। তাকে আবার জিজ্ঞেস করি, যে ফোন থেকে কোনো কল বা একটি এসএমএস পর্যন্ত করি না, ১৮ তারিখ সেই ফোনের বিল অগ্রিম পরিশোধ করার পরও ২২ তারিখে কেন আবার বিল দিতে হবে? মেয়েটি ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগের পুরনো গীত গেয়ে শোনায় পুনর্বার। আমি তাকে জানাই, যোগাযোগের সময় আমার নেই। ইচ্ছাও নেই।
মেয়েটি শেষমেশ আমাকে হুমকি দেয়, একটি নামকরা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আপনি যে ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজ করেছেন, সে ব্যাপারে আপনাদের প্রতিষ্ঠানের অথরাইজড পার্সনকে কমপ্লেইন করবো।
শুনে ভয়ের বদলে বরং ভালোই লাগল এই ভেবে যে, ওই কর্মীকে একটু হলেও আঘাত দেওয়া সম্ভব হল। জানি, ওই কর্মী তার দায়িত্বই পালন করছেন। তবু নিরুপায় আমি। কর্মীকে আঘাত দেওয়া মানে স্বয়ং গ্রামীণফোনকেই আহত করা। হোক তা সামান্য। আমি শুধু বললাম, কমপ্লেইন করতে আপনার কতোক্ষণ লাগতে পারে? খুব ভালো হয়, যদি পাঁচ মিনিটের মধ্যে সেটা করেন।
লাইন কেটে দিলাম এবং দীর্ঘ তিন বছর পর গ্রামীণফোনের সিমটি মডেম থেকে খুলে হেলাফেলায় রাখলাম এককোণে। ওই সিম আর কখনো সচল হবে না। বিদায় গ্রামীণফোন!
লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): গ্রামীণফোন, কেলেঙ্কারি, প্রতারণা, ইন্টারনেট, জিপিআরএস, মোবাইল ইন্টারনেট, mobile internet, gprs, internet, scam, grameenphone, grameen phone, fraud ;
প্রথম প্রকাশ
0 মন্তব্য