ভূমিদস্যুদের জোট, প্রতিমন্ত্রীর বুকের পাটা এবং একজন নির্লজ্জ নাঈমুলের আস্ফালন

আমরা ভুক্তভোগী নই বলে ঠিক টের পাই না। কিন্তু ঢাকায় যারা বসুন্ধরা বা যমুনা গ্রুপ কিংবা অন্যান্য লুটেরা আবাসন প্রতিষ্ঠানের হাতে প্রতারিত হয়েছেন, তারাই শুধু জানেন এই প্রতারণা কতোটা ভয়াবহ। এক প্রবাসীকে জানি, একযুগ আগে হাড়ভাঙা পরিশ্রমে অর্জিত ২০ লাখ টাকা তুলে দিয়েছিলেন বসুন্ধরার কাছে, প্লট কেনার আশায়। পরে কিস্তি হিসেবে পরিশোধ করেছিলেন আরো টাকা। কিন্তু বসুন্ধরা পরে সেই প্লট তিনগুণ দামে অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। শেষমেশ সেই প্রবাসী দেনদরবার করছিলেন মূল টাকাটা ফেরত পাওয়ার জন্য- এই খবর জানতাম। আর খোঁজ নেওয়া হয়নি পরে।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর খোদ প্রভাবশালী মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ভূমিদস্যুতা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, 'তাদের হাত অনেক লম্বা।' আমরাও জানতাম, আসলেই লম্বা। ফলে এদের বিরুদ্ধে কোথাও কিছু বলা যায় না, লেখাও যায় না এবং প্রকৃতপক্ষে ভূমিদস্যুতার খুব একটা বিচারও নেই। কিন্তু কদিন আগে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান হঠাৎ করেই রুখে দাঁড়ালেন ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে। মন্ত্রী বললেন, ‌"আপনারা পানিতে টাকা ঢাল, স্বপ্নের ঠিকানা নামে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করছেন। আপনারা ঘুমান কীভাবে? ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেন কীভাবে? আপনাদের লজ্জা হয় না! বিষ খেয়ে আপনাদের মরতে ইচ্ছে করে না? অন্যের জমি নিজের নামে বিক্রি করেন, লজ্জা হয় না! এসব আমার কথা নয়। এগুলো পত্রপত্রিকায় সাংবাদিকেরা প্রকাশ করেছে।"
নাগরিক সমাজ ছাড়াও সরকারেরই আরেক মন্ত্রী স্বয়ং তাকে এজন্য অভিনন্দন পর্যন্ত জানিয়েছেন। অন্যদিকে অপমানিত ভূমিদস্যুরা, খবর পাচ্ছি, ওপরমহলে ইতিমধ্যে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন। ভূমি প্রতিমন্ত্রীকে যে কোনো সময় সরিয়ে দেওয়া হতে পারে- এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। কুৎসা রটনার জন্য নিজেদের মালিকানাধীন পত্রপত্রিকাগুলো ইতিমধ্যে আদাজল খেয়ে লেগেছে প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। থেমে নেই অসৎ সাংবাদিকরাও। আমাদের সময় সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান আজকে লিখেছেন - "গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান মনে হয় একটু বেসামাল হয়ে পড়েছেন। তিনি ইতিমধ্যে অন্তত দুবার শিষ্টাচার লঙ্ঘন করেছেন।" হায়, এমন নির্লজ্জ লোকও কি হয়, সামান্য কটা টাকার জন্য যে ভূমিদস্যুদের দালালি করে আর শিষ্টাচার শেখায়!

পত্রিকার প্রথম পাতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। নাঈমুল ইসলাম খান গত মাসখানেকে সেই জায়গার কীরকম ব্যবহার করেছেন এবং কতোটা নির্লজ্জতার পরিচয় দিয়েছেন, দেখুন একনজর-

একজন নুরুল ইসলাম বিএসসি বড় কাজে লাগানো উচিত ছিল
Kool Shaving Cream উন্নয়নের ২০ বছর
কিউট আফটার শেভ লোশন ব্যবহার করছি
নাঈমুল ইসলাম খান সপরিবারে কানাডায়
সানিডেইল স্কুল প্লে গ্র“প শো অতুলনীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
কানাডার টরন্টোয় স্থানীয়দের সংবর্ধনা পেলেন নাঈমুল ইসলাম খান
নাঈমুল ইসলাম খান জাপান সফরে গেছেন
মালয়েশিয়ায় একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নাঈমুল ইসলাম খান
দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক ওয়ার্ল্ড নিউজপেপার কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন
দৈনিক আমাদের সময়ে বিজ্ঞাপনমূল্য যুক্তিসঙ্গত করা অত্যন্ত জরুরি
মাহফুজ আনাম-মতিউর রহমানকে ঝওজওটঝ জরিপ বিষয়ে খোলা চিঠি
নির্বাহী সম্পাদক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি (তাও একেবারে নিজের নামে লেখা)

আগের দুটি পোস্ট
খবরটি দেখে কেন যেন বুক ফেটে কান্না আসছে!
নাঈমুল ইসলাম খানের একটি গুরুত্বপূর্ণ আবেদন!

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): kool shaving creambashundharashah alamnayeemul islam khannayemul islam khannaimul islam khanamader shomoybangla daily newspaper ;

প্রথম প্রকাশ

Tags: , , ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply