ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণের জন্য মন খারাপ

গতকাল শুক্রবার শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে যা করেছেন, তার জন্য ঠিকই ছিল, তড়িঘড়ি তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্টেশনে ছুটে গেছেন। সহাস্য মুখে তিনি ঘোষণা করলেন- "কয়েক মাসের লড়াইয়ের পর অবশেষে তামিল টাইগারদের রাজধানী কিলিনোচ্চি দখল করেছে শ্রীলংকার সেনারা।" খবরটি শুনে কেমন যেন এক বিষণ্নতা ছুঁয়ে গেল। লাখ লাখ তামিলের স্বাধীন আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন তাহলে শেষ হতে চলেছে!

দেশের ভেতরে এলটিটিই, লিবারেশন টাইগারস অব তামিল ইলম, স্মরণকালের ভয়াবহ সেনা অভিযানের মুখে পড়ে প্রায় ছয় মাস ধরে। জল-স্থল-আকাশে সর্বাত্মক সেই অভিযান তামিল টাইগারদের কোণঠাসা করে ফেলছিল- সংবাদ সংস্থার তরফে কিছুই আমাদের অগোচরে থাকছিল না। এরও আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের ক্রমাগত চাপ বহির্বিশ্বে তামিল টাইগারদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিল প্রায় পুরোপুরি। বর্হিবিশ্ব কার্যক্রমের মূল সংগঠকদের গ্রেপ্তার করে অর্থ সংগ্রহের সবগুলো পথও বন্ধ করে দেওয়া হয়। টাইগাররা এতে নিদারুণ অর্থসংকটে পড়ে যায়। অস্ত্র কেনার জন্য অর্থ লাগে। ক্ষতিগ্রস্থ বিমান মেরামতের জন্য অর্থ লাগে। এলটিটিই নিয়ন্ত্রিত শহরগুলোতে প্রশাসন সচল রাখার জন্য অর্থ লাগে। কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। এর ওপর স্বপক্ষত্যাগী গেরিলাদের সংখ্যাও বাড়ছিল।

সব আশা চূর্ণ করে এলটিটিইর রাজধানী কিলিনোচ্চির পতন ঘটল। তারও আগে পতন ঘটে পারানথান শহরের। এখন হাতে সবেধন নীলমনি বন্দরনগরী মুল্লাইতিভু। এটিও টাইগারদের হাতছাড়া হয়ে যাবে শীঘ্রই। সহযোদ্ধাদের নিয়ে ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ আবার আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাবেন নিশ্চিত। পলায়নোন্মুখ তামিল গেরিলারা আবার নিশ্চয়ই সংঘবদ্ধ হবেন একদিন। ২৫ বছর ধরে তিলে তিলে চলা যুদ্ধ তামিলদের সহজে ঘরে ফেরাবে না- এটাই আশা।

তামিল জাতির মহানায়ক এলটিটিই প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণের ইস্পাতসম মুখটি মনে পড়ছে। মনের কোণে মন খারাপের মেঘ জমে। একদিন আমরাও তাদের মতো ছিলাম, সেই একাত্তরে। 

ছবিতে এলটিটিই প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ, ওপরে তামিল টাইগারদের প্রতীক

Tags: ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply