গত শুক্রবার সারা দেশে যে অমন বৃষ্টি হলো, এর পূর্বাভাস নাকি আবহাওয়া বিভাগ
ভালোভাবে দিতে পারেনি। এমন অভিযোগ শোনা গেছে অনেকের মুখেই। কাঠফাটা গরমের
দিনে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস—যদিও এমন কোনো অদেখা কীর্তি নয়, তবু
আবহাওয়ার চিরাচরিত পূর্বাভাসের সঠিক অর্থ বা ভাবার্থ অনুধাবন না করে অহেতুক
সমালোচনা করাও অনুচিত। উদ্ভূত সমস্যা নিরসনে আবহাওয়ার পূর্ণাঙ্গ অভিধান
তৈরির উদ্যোগটা শেষমেশ রস+আলোকেই নিতে হলো। সঙ্গে বোনাস হিসেবে থাকছে
আবহাওয়ার পূর্বাভাস তৈরির সহজ পদ্ধতি।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসের সঠিক অর্থ
পূর্বাভাস: আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সঠিক অর্থ: যদি ঘরের বাইরে যান, সঙ্গে অবশ্যই একটি রেইনকোট অথবা ছাতা রাখুন।
পূর্বাভাস: দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সঠিক অর্থ: আবহাওয়া থাকবে পুরোপুরি শুষ্ক। সঙ্গে হাতপাখা রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
পূর্বাভাস: দেশের সব কটি বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সঠিক অর্থ: ছাদের ওপরে কাঁথা-তোশক-বালিশ শুকানোর উপযুক্ত সময়ই বলা চলে। কারণ, বৃষ্টি তো দূরের, দমকা হাওয়ার সম্ভাবনাও সামান্য।
পূর্বাভাস: অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সঠিক অর্থ: দিনভর রোদের তাপ যে মোটামুটি কড়া থাকবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা যেতে পারে। শরীরে ঘামের বর্ষণ অবশ্য মাঝারি ধরনের ভারীই হবে।
পূর্বাভাস: মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
সঠিক অর্থ: কুয়াশা পড়তে পারে, তবে সেটা বর্ণিত সময়ের পরের দিন সন্ধ্যার দিকে। ধরন হবে মাঝারি থেকে ভারী।
পূর্বাভাস: আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুকনো থাকতে পারে। বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
সঠিক অর্থ: স্থায়ী দমকা হাওয়াসহ মাঝারি থেকে ভারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি—এ কথা বলাই বাহুল্য।
পূর্বাভাস: পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে।
সঠিক অর্থ: বুঝে নিতে হবে, দিনটি যেহেতু শুক্র কিংবা শনিবার—সরকারি অফিসসূচি অনুযায়ী আবহাওয়া বিভাগেও সাপ্তাহিক ছুটির দিন। সুতরাং ওই ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়ার যে সামান্য পরিবর্তন ঘটছে—সেটিই অনেক পাওয়া।
পূর্বাভাস: সমুদ্র ও নদীবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক-সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সঠিক অর্থ: কিছুটা বাতাস বইবে। বিজলিও চমকাবে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা নেই বললেই চলে। এটি মূলত ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের মহড়ার জন্য বিশেষভাবে তৈরি একটি সংকেত।
নিজেই বানিয়ে নিন আবহাওয়ার পূর্বাভাস
দেশের সব কটি বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় আজ ভোরবেলা প্রধানত পূর্ব দিক থেকে মৃদু আলোসহ সূর্য দেখা যেতে পারে। সন্ধ্যার আগপর্যন্ত সূর্যালোক মাঝারি থেকে ভারী আকারে বিরাজ করবে। তবে আকাশ মেঘলা থাকলে সূর্যের আলো ব্যাপকভাবে কমে আসতে পারে। দিনে প্রধানত রাস্তাঘাট ও অফিসপাড়াগুলোতে শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে। মৌসুমি বায়ুচড়ার কারণে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার বেগে ধামা-কুড়াল-কিরিচসহ অস্থায়ী দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বৃষ্টি হলে আকাশ থেকে বিপুল পরিমাণ পানি মাটিতে নেমে আসতে পারে।
সারা দেশের প্রায় সব কটি স্থানে বিকেলের পর থেকে যেকোনো সময় সন্ধ্যা নামার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে একযোগে ভারী ধোঁয়ার প্রভাবে শিল্পকারখানা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সন্ধ্যা নামতে পারে বিকেলের আগেই। সন্ধ্যা নামার পরপরই গুলশান, ধানমন্ডিসহ ঢাকা মহানগরের অভিজাত এলাকাগুলো ব্যতীত দেশের সব কটি বিভাগে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ একযোগে অন্ধকার নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অভিজাত অঞ্চলগুলোতে মাঝারি থেকে ভারী আলো প্রবাহিত হওয়ার কারণে অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকাগুলোতে প্রধানত শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে। এই সময় দেশের দু-এক জায়গায় মুষ্ঠি অথবা বজ্রমুষ্ঠিসহ বিক্ষোভ মিছিল হতে পারে। তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। শুধু তা-ই নয়, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায়ও আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে সামান্য।
এদিকে আসন্ন বর্ষাকালে বৃষ্টি হওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। উল্লেখ্য, গত শীত মৌসুমে মৃদু থেকে মাঝারি ঠান্ডা পড়ার আগাম পূর্বাভাস দিয়ে প্রশংসিত হয়েছিল আবহাওয়া বিভাগ।
জেনে রাখা ভালো
ফেসবুক ফ্যান পেইজ ১ □ ফেসবুক ফ্যান পেইজ ২ □ ফেসবুক ফ্যান পেইজ ৩
প্রকাশকাল : ৯ এপ্রিল ২০১২
আবহাওয়ার পূর্বাভাসের সঠিক অর্থ
পূর্বাভাস: আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সঠিক অর্থ: যদি ঘরের বাইরে যান, সঙ্গে অবশ্যই একটি রেইনকোট অথবা ছাতা রাখুন।
পূর্বাভাস: দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সঠিক অর্থ: আবহাওয়া থাকবে পুরোপুরি শুষ্ক। সঙ্গে হাতপাখা রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
পূর্বাভাস: দেশের সব কটি বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সঠিক অর্থ: ছাদের ওপরে কাঁথা-তোশক-বালিশ শুকানোর উপযুক্ত সময়ই বলা চলে। কারণ, বৃষ্টি তো দূরের, দমকা হাওয়ার সম্ভাবনাও সামান্য।
পূর্বাভাস: অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সঠিক অর্থ: দিনভর রোদের তাপ যে মোটামুটি কড়া থাকবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা যেতে পারে। শরীরে ঘামের বর্ষণ অবশ্য মাঝারি ধরনের ভারীই হবে।
পূর্বাভাস: মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
সঠিক অর্থ: কুয়াশা পড়তে পারে, তবে সেটা বর্ণিত সময়ের পরের দিন সন্ধ্যার দিকে। ধরন হবে মাঝারি থেকে ভারী।
পূর্বাভাস: আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুকনো থাকতে পারে। বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
সঠিক অর্থ: স্থায়ী দমকা হাওয়াসহ মাঝারি থেকে ভারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি—এ কথা বলাই বাহুল্য।
পূর্বাভাস: পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে।
সঠিক অর্থ: বুঝে নিতে হবে, দিনটি যেহেতু শুক্র কিংবা শনিবার—সরকারি অফিসসূচি অনুযায়ী আবহাওয়া বিভাগেও সাপ্তাহিক ছুটির দিন। সুতরাং ওই ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়ার যে সামান্য পরিবর্তন ঘটছে—সেটিই অনেক পাওয়া।
পূর্বাভাস: সমুদ্র ও নদীবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক-সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সঠিক অর্থ: কিছুটা বাতাস বইবে। বিজলিও চমকাবে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা নেই বললেই চলে। এটি মূলত ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের মহড়ার জন্য বিশেষভাবে তৈরি একটি সংকেত।
নিজেই বানিয়ে নিন আবহাওয়ার পূর্বাভাস
দেশের সব কটি বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় আজ ভোরবেলা প্রধানত পূর্ব দিক থেকে মৃদু আলোসহ সূর্য দেখা যেতে পারে। সন্ধ্যার আগপর্যন্ত সূর্যালোক মাঝারি থেকে ভারী আকারে বিরাজ করবে। তবে আকাশ মেঘলা থাকলে সূর্যের আলো ব্যাপকভাবে কমে আসতে পারে। দিনে প্রধানত রাস্তাঘাট ও অফিসপাড়াগুলোতে শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে। মৌসুমি বায়ুচড়ার কারণে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার বেগে ধামা-কুড়াল-কিরিচসহ অস্থায়ী দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বৃষ্টি হলে আকাশ থেকে বিপুল পরিমাণ পানি মাটিতে নেমে আসতে পারে।
সারা দেশের প্রায় সব কটি স্থানে বিকেলের পর থেকে যেকোনো সময় সন্ধ্যা নামার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে একযোগে ভারী ধোঁয়ার প্রভাবে শিল্পকারখানা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সন্ধ্যা নামতে পারে বিকেলের আগেই। সন্ধ্যা নামার পরপরই গুলশান, ধানমন্ডিসহ ঢাকা মহানগরের অভিজাত এলাকাগুলো ব্যতীত দেশের সব কটি বিভাগে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ একযোগে অন্ধকার নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অভিজাত অঞ্চলগুলোতে মাঝারি থেকে ভারী আলো প্রবাহিত হওয়ার কারণে অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকাগুলোতে প্রধানত শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে। এই সময় দেশের দু-এক জায়গায় মুষ্ঠি অথবা বজ্রমুষ্ঠিসহ বিক্ষোভ মিছিল হতে পারে। তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। শুধু তা-ই নয়, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায়ও আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে সামান্য।
এদিকে আসন্ন বর্ষাকালে বৃষ্টি হওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। উল্লেখ্য, গত শীত মৌসুমে মৃদু থেকে মাঝারি ঠান্ডা পড়ার আগাম পূর্বাভাস দিয়ে প্রশংসিত হয়েছিল আবহাওয়া বিভাগ।
জেনে রাখা ভালো
- আবহাওয়ার পূর্বাভাস তৈরির জন্য যে প্রবচনগুলো মুখস্থ রাখা জরুরি—হালকা থেকে মাঝারি, মাঝারি থেকে ঘন বা ভারী, হালকা থেকে মাঝারি ভারী ইত্যাদি। এ ছাড়া ‘সব কটি বিভাগের দু-এক জায়গায়’ বাক্যটিও আবহাওয়ার পূর্বাভাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
- রাতের তাপমাত্রা সব সময়ই অপরিবর্তিত থাকবে। তবে মাঝেমধ্যে সামান্য বৃদ্ধি পাবে।
- বছরজুড়ে বাংলাদেশের সমস্ত আকাশ অবশ্যই সাময়িকভাবে আংশিক মেঘলা থাকবে।
- বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি সব সময়ই হবে অস্থায়ী দমকা হাওয়া সহযোগে। বৈচিত্র্য সৃষ্টির স্বার্থে মাঝেমধ্যে ‘ঝোড়ো হাওয়া’ শব্দটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
- বাংলাদেশে আজীবন বাতাস প্রবাহিত হবে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে। মাঝেমধ্যে সেটিকে দক্ষিণ দিক দিয়ে প্রবাহিত করে পশ্চিম দিকে বের করে নেওয়া ভালো, তবে আবশ্যকীয় কিছু নয়।
সংযুক্তি
প্রথম আলো অনলাইন □ ই-প্রথম আলো ফেসবুক ফ্যান পেইজ ১ □ ফেসবুক ফ্যান পেইজ ২ □ ফেসবুক ফ্যান পেইজ ৩
প্রকাশকাল : ৯ এপ্রিল ২০১২
0 মন্তব্য