দাঁড়কাক যখন কোকিল হয়ে ওঠে
হঠাৎ দেখা গেল, গত দু-তিন দিনে দেওয়া আমার কয়েকটি পোস্ট প্রথম আলো ব্লগের অন্যতম মডারেটর মাহবুব মোর্শেদের পশ্চাৎদেশে বেশ খানিকটা আঘাত হেনে ফেলছে। ব্যথাতুর মন নিয়ে তিনি দীর্ঘ একটি লেখা পয়দা করেছেন গতকাল। সেই লেখার প্রায় পুরোটাই লোকালটককে নিয়ে। এটা এমন একজন লিখেছেন, কারওয়ানবাজারের সিএ ভবনে কাক গোত্রের যে প্রাণীটিকে গণ্য করা হয় "পিকিউলার জীব" হিসেবে। বিচিত্র ধরনের অদ্ভূত হাস্যকর আচরণ তার- চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। খোদার কসম, মিথ্যা বলছি না। তবে এটা হাস্যকর হতে পারে, কিন্তু অন্যায় বলতে পারি না।
কখনো যা বলা হয়নি
কখনো বলা হয়নি, এখন বলছি। প্রথম আলোর যারা নীতিনির্ধারক, শুরুতে তাদের অনেকেই জানতেন, প্রথম আলো ব্লগের দায়িত্ব নিচ্ছেন সচলায়তনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এসএম মাহবুব মুর্শেদ, যিনি প্রযুক্তিবিদ এবং উচ্চশিক্ষিত। পরে যায়যায়দিনফেরত মাহবুব মোর্শেদকে দেখে বেশিরভাগই চরম হতাশ হন। টেকনিক্যাল জ্ঞানশূন্য একজন লোক যখন একটা ব্লগের দায়িত্ব পেয়ে যায়, তখন বুঝতে কারোরই অসুবিধা হয়নি যে, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঘাপলা ছিল, প্রতারণাও ছিল। তবে মাহবুব মোর্শেদ তার পুরো চাকরিজীবনে একমাত্র এই প্রথম আলোতে এসে নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন, বাসা ভাড়াটা তার বাকি পড়ছে না- সত্যি বলতে কী এটা তো আমার কাছে আনন্দের খবরই ছিল। কিন্তু প্রথম আলোর (আসলে ঠিক প্রথম আলোরও না, ব্লগ এবং জবস হল প্রায় আলাদা কনসার্ন) সর্বনিম্ন পদে যোগ দিয়ে মাহবুব মোর্শেদ যদি এতো উচ্চকণ্ঠে কথা বলেন, তাহলে কি হয়! সবচেয়ে বড়ো কথা, লোকালটক প্রথম আলোর কর্মী কিনা- তা মাহবুব মোর্শেদ বিচার করছেন কোন্ যোগ্যতায়, আমার খুব জানার ইচ্ছা। এই প্রথমবারের মতো বিনয়ের সঙ্গেই বলছি, আমার যে অবস্থান, সেই অবস্থানে যাওয়া মাহবুব মোর্শেদের পক্ষে বোধহয় সম্ভব হবে না এই ইহজনমে।
ক্যান্টিন বয়ও তাহলে সাংবাদিক!
মাহবুব মোর্শেদ বেসিক্যালি সাংবাদিক নন। দৃষ্টিভঙ্গি খুব উদার করলেও তাকে সাধারণ বিভাগের কর্মচারী বলা যেতে পারে। তার যে কাজ, সর্বশেষ সপ্তম ওয়েজ বোর্ডের বিবরণীতেও এই কাজ সংবাদপত্রের কাজ বলে গণ্য হচ্ছে না। মাহবুব মোর্শেদ যদি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেয়, তাহলে সেটা হবে চরম অসততা। অনেকেই বোধহয় জানেন না, মূল প্রথম আলোর সঙ্গে সত্যি বলতে কী, প্রথম আলো ব্লগের কোনো যোগ নেই। প্রথম আলো জবসের মতো ব্লগটাও আলাদা উদ্যোগ। এহেন মাহবুব মোর্শেদ যদি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেয়, তাহলে তো ক্যান্টিন বয়ও সাংবাদিক!
কামারও পরিচয় জানতে চায়!
"উনি জাস্ট প্রথম আলোর পরিচয় ব্যবহার করে সহব্লগারদের সমীহ আদায় করতে চান"- বলেছেন মাহবুব মোর্শেদ। ব্লগের মতো উন্মুক্ত ফোরামে ব্যক্তিগত পরিচিতি ব্যবহার করে সমীহ আদায়ের চেষ্টাটা যে একেবারেই কামারসুলভ মতামত- এটা বুঝতে আশা করি কারোরই অসুবিধা হবে না। এখানে কে প্রথম আলোর কর্মী, কে ইউনোকলের, কে বেক্সিমকো, কে প্রকৌশলী, কে ছাত্র- এসব প্রশ্ন একেবারেই অবান্তর। ব্লগে এইসব পরিচয়ের কানাকড়ি মূল্য নেই। আমি নিজেও মূল্য দেই না। সেই কারণেই আমি বোধহয় এই উন্মুক্ত ফোরামে সচেতনভাবে কোথাও কখনো বলিনি- আমি কে, কী করি কিংবা কোথায় থাকি? আমি মনে করি, সেটা বলার দরকারও নেই। কারণ ব্লগ আমার কাছে অবসর কাটানোর শ্রেফ একটা মাধ্যম। আর ছদ্মনামেই ব্লগিং করতে পছন্দ করি আমি। এটা অবৈধও নয়।
তারপরও সহ-ব্লগারদের কাছে পরিচয় ব্যবহার করে সমীহ আদায় করেছি- এমন উদাহরণ কেউ দিন তো দুয়েকটা। অপেক্ষায় রইলাম।
প্রথম আলো ব্লগ নিয়ে আমার ক্ষোভ কেন?
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ও স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে লেখা বিভিন্নজনের অনেক পোস্টই প্রথম আলো ব্লগ কর্তৃপক্ষ মুছে দিয়েছে। এমনকি অনেককে ব্যানও করেছে। এইসব ঘটনায় আমি স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ, ব্যথিত হয়েছি। এটা অনেকেই বোধহয় বুঝতে পেরেছেন, ত্রিভূজ প্রথম আলো ব্লগে কার্যত মডারেটরের দায়িত্ব পালন করছে। সামহোয়্যারে দুজনের অবস্থান এবং প্রথম আলো ব্লগের সাম্প্রতিক করুণ অবস্থা বিশ্লেষণ করে পুনরায় নিশ্চিত করা যায় যে, ত্রিভূজ এবং মাহবুব মোর্শেদ সমমনা, সমমতের অনুসারী। এটা তো স্বাভাবিকভাবে আমার কাছে খারাপ লাগার কথা। আমি মেইলে সেকথা তাকে তৎক্ষণাৎ জানিয়েছি। আর আমার সবচেয়ে বড়ো ক্ষোভ যে কারণে, সেটা হল মাহবুব মোর্শেদের বিতর্কিত ভূমিকা এবং তার অসংলগ্ন আচরণের কারণে ওয়েব ইউজারদের কাছে প্রথম আলোর সম্মানহানি ঘটছে- এটা দিনের মতো পরিস্কার। হাসিবের একটা মন্তব্য আমার বেশ মনে ধরেছিল- সারাজীবনে মাহবুব মোর্শেদ কখনো মাথা তুলে কথা বলার সুযোগ পায় নাই। প্রথম আলো ব্লগের মডারেটর হয়ে সেই ক্ষমতাটা সে এখন উপভোগ করছে শুধু।
আমার কথা স্পষ্ট
সামহোয়্যারে কে কিভাবে ধর্ষিত হয়েছিল, কাকে কিভাবে বলাৎকার করা হয়েছিল, তা নিয়ে আমার ভাবনা নেই। হয়তো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল সামহোয়্যার কিংবা অন্য কোথাও। কিন্তু সেই দুঃসহ স্মৃতি জাগিয়ে রেখে ধর্ষিতা নারীর মতো মাহবুব মোর্শেদের আচরণটা বড্ড বাজে লাগছে। তার সমস্যাটা মানসিক- এটা আমার আগেই জানা ছিল। জেনেছি পরেও। তার চেয়েও বড়ো সমস্যা হল, এই মানসিক রোগীর সামনের দিনগুলো খুব কঠিন হবে!
প্রয়োজনীয় ঠিকানা
ভালো কথা, মাহবুব মোর্শেদ নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবছেন কখন থেকে? কোমরে ব্যথা হয়? নিচে একটি ঠিকানা দিচ্ছি- কাজে লাগতে পারে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকা।