ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলাগুলিময় দিন : একটি ব্যক্তিগত রিভিউ


খুব, খুবই ভালো লাগছে আজ। আবার খারাপও লাগছে কিছু কিছু ব্যাপার নিয়ে। বলা যেতে পারে, মিশ্র অনুভূতি। শুনেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলাগুলি করেছে ছাত্রদলের দুই গ্রুপ। দায়িত্ব মনে করে বসে ছিল না ছাত্রলীগও। টেন্ডুলকারীয় সেঞ্চুরির সাদামাটা খবরে যেমন, সাধারণ গোলাগুলির ওইটুকু তথ্যেও তেমন কি আর মন ভরে? খুব কৌতূহল নিয়ে জানতে মন চাইছে, তারা কী অস্ত্র ব্যবহার করলো, নতুন কী কী অস্ত্র যুক্ত হল বহরে? যদিও ব্যক্তিগতভাবে চরম হতাশ হয়েছি, কয়েকজনের হাতে রামদা গোছের কিছু যন্ত্রপাতি দেখে। বলি, চোরাই বাজারে আজকাল আধুনিক অস্ত্রের খুব কি আকাল পড়েছে?

সকালের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপের পর ছাত্রদলের উভয়পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলল বেশ অনেকক্ষণ। কিন্তু হায়, কোনো বৈচিত্র্যই দেখলাম না। সেই ষাটের দশকের বিরক্তিকর পুনরাবৃত্তি যেন! বিশ্ববাসীর সামনে এই সাধারণ ইটপাটকেল আর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া নিয়ে দাঁড়ানো কতোটুকু শোভনীয়, তা ছাত্রনেতারাই জানেন। পরে আবার পরস্পরের ওপর হামলার একটি মনোগ্রাহী ঘটনা ঘটেছে বটে, কিন্তু সেটা খুব একটা আশানুরূপ হয়নি। রড-কিরিচ নিয়ে এইসব কোন্ ধরনের সেকেলে হামলা, বুঝে উঠতে এই এখনো সময় লাগছে আমার। ঢাকার অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মান সম্পর্কে এই প্রথম খুবই বাজে একটা ধারণা হল। বিএসটিআই যদি এখনই অস্ত্র ব্যবসাকে তাদের আওতাভূক্ত করার উদ্যোগ না নেয়, তাহলে রড-কিরিচের সাবেকী ব্যাপার-স্যাপার হয়তো আরো বহুদিন আমাদের দেখতে হবে। :(

হ্যাঁ, যথারীতি ভালো লেগেছে পুলিশের ভূমিকা। তবে তারা পুরোপুরি নিরব না থেকে নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে। সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিক্ষেপ করা হয় আট রাউন্ড টিয়ারগ্যাস। কী আর বলবো! শুধু বলি যে, পুলিশের এই নাক-গলানি স্বভাব বন্ধ হওয়া উচিত। তাদের বরং উচিত ছিল, আট রাউন্ড টিয়ারগ্যাসকে তিন ভাগ করে ছাত্রদলের দু গ্রুপ এবং ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে, শেষের দিকে এসে ছাত্রলীগও সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল। এক পর্যায়ে তারা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকুর ওপর হামলা চালায়। তবে তার মাথা যথেষ্ট ফাটেনি- এটাই বেশি দুঃখ দিল। এরকম একটা সুযোগ আবার কবে মিলবে কে জানে! ছাত্রলীগ আবার অভিযোগ করছে, টুকুও নাকি পুলিশের ওপর হামলা করেছে। সত্যি হলে টুকুর পুলিশ পদক অবশ্যপ্রাপ্য।

মন খারাপের মেঘটুকু অবশ্য পরে উবে গেছে, যখন শুনলাম, মিছিলকারীরা প্রকাশ্যে চাপাতি, রড, কিরিচ উঁচিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেছে। গর্বে বুকটা স্ফীত হয়ে ওঠে। স্পর্ধিত চেতনায় সূতীক্ষ্ম চিৎকারে বলি- 'আমরা শক্তি আমরা বল, আমরা ছাত্রদল!'

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): dhaka university ;

প্রথম প্রকাশ

Tags: , ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply