উৎসব করে মৃত্যুর এই আয়োজন মেনে নিতে পারি না

বলি না যে, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারবর্গকে নির্মমভাবে হত্যা করে ওরা ঠিক কাজ করেছে। বলি না যে, প্রকাশ্য আদালতে যে বিচার হয়েছে, সেই বিচারে পাওয়া শাস্তিটা অন্যায্য হয়েছে। ক্রসফায়ারে মেরে ফেললেও অতোটা বিষণ্ন বোধ করতাম না। কিন্তু রীতিমতো উৎসব করে মৃত্যুর এই আয়োজন- এই সভ্য দুনিয়ায় মেনে নিতে পারি না। সে হোক সাদ্দাম কিংবা কেমিকেল আলী, ফারুক কিংবা বজলুল হুদা, টিমোথি ব্রাউন কিংবা আকমল শেখ।

মৃত্যুদণ্ড ব্যাপারটা সম্ভবত বর্বর যুগের সর্বশেষ চিহ্ন, সভ্য দুনিয়ায় যা এখনো রয়ে গেছে। যদিও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ভাষ্যমতে, এখন বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি দেশ আইন করে বা প্রায়োগিকভাবে মৃত্যুদন্ড বিলোপ করেছে৷ ২০০৮ সালের জুন মাসের শেষে, এই সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩৭-এ৷ এই ১৩৭টি দেশের মধ্যে, ৯২টি সকল অপরাধের জন্য বিলোপ করেছে, ১১টি শুধুমাত্র সাধারণ অপরাধের জন্য বিলোপ করেছে এবং ৩৪টি প্রায়োগিকভাবে বিলোপ করেছে৷ এশিয়াতে যে ২৭টি দেশ সব ধরনের অপরাধের জন্য আইন করে বা প্রায়োগিকভাবে মৃত্যুদন্ড বিলোপ করেছে সেগুলো হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, ভূটান, কম্বোডিয়া, কুক দ্বীপপুঞ্জ, কিরিবাতি, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মাইক্রোনেশিয়া (ফেডারেল রাষ্ট্র), নেপাল, নিউজিল্যান্ড, নিউই, পালাও, ফিলিপাইন, সামোয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, তিমুর-লেস্তে, টুভালু ও ভানুয়াতু৷ ফিজি শুধুমাত্র সাধারণ অপরাধের জন্য বিলোপ করেছে৷ ব্রুনাই, দক্ষিণ কোরিয়া, লাওস, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নাউরু, পাপুয়া নিউগিনি, শ্রীলংকা ও টোঙ্গা প্রায়োগিকভাবে বিলোপ করেছে৷

আর এই বাংলাদেশে ফাঁসির রশি নিয়ে রসালাপ- পত্রপত্রিকা থেকে এমনকি ব্লগারদেরও প্রিয় বিষয়। অন্য দেশে হলে আর কেউ না হোক, ব্লগাররা নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়তো। অথবা এও হতে পারে যে, ফেটে না পড়াটাই স্বাভাবিক। হয়তো দলপ্রেমী, নেতাভক্ত নই বলে আমিই বুঝে উঠতে পারছি না। হয়তো সেটা আমারই সীমাবদ্ধতা। হতে পারে! তবু শালার সব মৃত্যুই কেন যেন বেদনাদায়ক। মন খারাপ করে দেয়।

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): death penaltystanley williamssheikh mujibcolonel faruk ;

প্রথম প্রকাশ

Tags: , ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply