জোর গলায় এবার বলে দিতে পারি, বিদায় গ্রামীণফোন!

ইন্টারনেট ব্যাপারটা সিগারেটের মতো। ছাড়তে চাইলেও ছাড়া যায় না। গায়ের সঙ্গে লেপ্টে থাকে। অথচ ওইটুকু নিয়েই হাজারো ঝামেলা। পাড়ার ব্রডব্যান্ড সেই শুরু থেকেই বিশ্রী এক 'ফ্রডব্যান্ড'। লাইন-টাইন নিয়ে বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা। ওদিকে ডায়ালআপের গতি কচ্ছপকে হার মানিয়ে দেবে যে কোনো অবস্থাতেই। উপায়হীন আমাদের সামনে শেষ ভরসা হয়ে এসেছিল মোবাইল ইন্টারনেট। তার ভেতরে আবার একটেল, বাংলালিংক কিংবা ওয়ারিদের ওপর ভরসা করার মতো অবস্থা কোনোকালেই ছিল না। গ্রামীণফোন পিওর বেনিয়া। তুলনামূলক ভালোই করছিল তারা। হাজারো ঝুটঝামেলার পরও দরিদ্র দেশের মানুষ গ্রামীণের ইন্টারনেটের ওপর হামলে পড়তে দ্বিধা করেনি। তারপর দিনে দিনে তাদের সেবার মান তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে, মানুষ উপায়হীন। আমি নিজে এর আগে দু দুবার গ্রামীণফোনকে বিদায় জানানোর চেষ্টা করেছিলাম। লিখে-টিখে, ক্যারিকেচার-টেচার করে ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করেছি বারকয়েক। লাভ তাতে হয়নি তেমন। আবার ফিরতে হয়েছে সেই হারামীর ফোনে। গ্রামীণ ব্যবহার করে গ্রামীণকে গাল দেওয়াটা কপটতার পর্যায়ে পড়ে, 'আর কিছু নাই বলে জিপিতে আছি' ধরনের যতো অজুহাতই থাকুক না কেন।

তক্কে তক্কে ছিলাম সুতরাং! নজর ছিল বরাবর বিটিসিএল ব্রডব্যান্ডের দিকে। তবে বিটিসিএলের সমস্যা একটিই- প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে মানুষের ভীতি। সেই ভীতি কাটাতে আমারও সময় লেগেছে যথেষ্ট। ওই ভীতি কাটাতে দেখছি, তারা নিজেরাও মোটামুটি সচেষ্ট। ইএমএম সিস্টেমস নামের একটি কম্পানি এখন বিটিসিএলের হয়ে কাজ করছে। শিক্ষিত লোকজন কাজ করছে সেখানে। গ্রাহক প্রান্তে সংযোগ দেওয়ার প্রায় সব কাজই তারা করছে। সুযোগ যখন এল, বিটিসিএল থেকে একটি ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে নিলাম। মাসখানেক লাগবে ভেবেছিলাম। কিন্তু সংযোগ পেয়েছি সপ্তাহখানেকের মধ্যেই। চুক্তিপত্র-ডিমান্ড নোট-ফোট লাগবে ভেবেছিলাম। সেসব লাগেনি। জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি, সর্বশেষ পরিশোধিত টেলিফোন বিলের কপি, দু কপি ছবিই শুধু লেগেছে। খরচ বলতে, চার পোর্টের ইউটি স্টারকম এডিএসএল মডেমের দাম নিয়েছে ৪২০০ টাকা, সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন চার্জ ৫০০ টাকা, সেটআপ ও কনফিগারেশন চার্জ ৬০০ টাকা। সবমিলিয়ে ৫৩০০ টাকা। ১২৮ কেবিপিএস সংযোগের জন্য মাসে দিচ্ছি সাড়ে ৮০০ টাকা।বলতে দ্বিধা নেই, খুবই দ্রুতগতির সংযোগ। কিছুক্ষণ আগে একটি টিভি ধারাবাহিকের ৩০টিরও বেশি পর্ব ডাউনলোড করতে সময় লাগল মাত্র ঘন্টাখানেক। ফাইল প্রপার্টিজে গিয়ে দেখি, মোট আকার ১.১৩ গিগাবাইট। ইউটিউবের লিংকে ক্লিক করে এখন দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলতে হয় না। ভাবা যায়! এবার জোর গলায় বলে দিতে পারি, হারামীর ফোন আর না। কিছুতেই না।

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): grameenphonegpgrameen phonebtclbttbbtcl adslbtcl broadbandmobile internetedgegprs ;

প্রথম প্রকাশ

Tags: ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply