বামবিষয়ক একটি বিলম্বিত শোক সংবাদ

ক্ষুদ্র এই জীবনে অল্পস্বল্প দেখায় অনেকে বিষয় নিয়েই কৌতূহল জেগেছে মনে। বামপন্থা তার মধ্যে একটি। এটি কী, খায় না মাথায় দেয়- খুব বেশি ভাবিনি কখনোই। প্রগতি প্রকাশনের দামি "পুঁজি"র কয়েক খণ্ড সাজিয়ে রেখেছি বুকশেলফে। কিন্তু কেন যেন পড়ার আগ্রহ জাগেনি। আমি শুধু দেখেছি, বাম দলগুলোর সমাবেশে কখনোই লোক থাকে না। তাদের মিছিলগুলো হয় হ্রস্ব। এবং তারা কখনোই ভোটে জেতে না।

কিন্তু না, আমাদের ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণ করে তাদের বেশ কজন নেতা এবার ভোটে জিতে সাংসদ হয়েছেন। তবে তা সোজা পথে নয়, বাঁকা পথে। রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, ফজলে হোসেন বাদশা এবং মঈনুদ্দিন খান বাদল এবার নির্বাচনে জিতেছেন পুরোপুরি নৌকার ওপর ভর করে। পুরো নির্বাচনই তারা করেছেন আওয়ামী লীগের ব্যানারে, জনসংযোগে শেখ হাসিনার নাম জঁপে জঁপে- নাম যদিও হয়েছে '১৪ দল'।

আমার ব্যক্তিগত ধারণা, জামায়াত বা জামায়াতের মতো মৌলবাদী দলগুলোকে মোকাবেলার জন্য নানা কারণে আওয়ামী লীগ খুব একটা উপযুক্ত নয়। আমার ধারণায় মৌলবাদকে রুখতে পারে একমাত্র বাম মতাদর্শ। কিন্তু বামপন্থীরা সেভাবে কখনোই বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন পায়নি। বামপন্থী নেতারাও জনগণের কাছে আদর্শ হয়ে দাঁড়াতে পারেননি। এরপরও যা কিছু সম্ভাবনা অবশিষ্ট ছিল, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুরা আওয়ামী লীগের মধ্যে বিলীন হয়ে গিয়ে সেই সম্ভাবনা প্রায় নিঃশেষ করে দিলেন। বিলীন হলে ক্ষতি নেই। কিন্তু এখন থেকে তারা আওয়ামী লীগের ছকের বাইরে পা ফেলবেন না নিশ্চিত, ফেলা সম্ভবও নয়। সুতরাং, ধরে নেওয়া যায় এখন থেকে তাদের যে কন্ঠ আমরা শুনবো, সেটা হবে রিহার্সেল করা কন্ঠ, মসজিদের পেশ ইমামের কন্ঠ। ইমাম যে শব্দ করবেন, তারা শুধু তার প্রতিধ্বনিই করবেন। এবং করছেন! 

Tags: ,

About author

ফিউশন ফাইভ। ব্লগ লিখছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে।

0 মন্তব্য

Leave a Reply