নীরবতাও ভাঙে সে-ই, শীতল কন্ঠ তার, জিজ্ঞেস করে, এই শরীফ ভাইটা কে? আমি জবাব দেই, উনি আমার দুলাভাই। তার কন্ঠ একটু যেন চড়া মনে হল এবার- এতো আলাপ কিসের তার সঙ্গে? কল হিস্ট্রির অর্ধেকই তো তোমার শরীফ ভাইয়ের নাম! আমি জবাবে আবেগ, বলি তাকে, দেখো সন্দেহ করতে চাইলে করতে পারো। সেটা পুরোপুরি তোমার ইচ্ছা-অনিচ্ছা। আমার বলার কিছু নেই। তবে মনে রেখো ভালোবাসা টিকে থাকে বিশ্বাসের ওপর।
সেই আবেগ তাকে স্পর্শ করে না, মুখ থেকে মেঘও নামে না। সে হঠাৎ জানতে চায়, আমি কি তোমার শরীফ ভাইকে কল করতে পারি একটা? অবাক হওয়ার পালা আমার। বলি, কী অদ্ভূত ইচ্ছা তোমার! হুট করে তুমি ফোন করলে উনি কী মনে করবেন সেটা ভাবো একবার? এবার তার কণ্ঠ চরম রূঢ় শোনায়, সিনেমার ভিলেনের মতো দাঁতে দাঁত চেপে উগড়ে দেওয়া স্বর- আমি তোমার শরীফ ভাইকে কল করবোই। ওভাবে অন্তরাত্মা কি সেদিনই প্রথম শুকিয়েছিল আমার?
কল সে ঠিকই করেছিল। লিমির নামটা সেইভ করা ছিল 'শরীফ ভাই' নামে। মুঠোফোনে কয়েকদফা ত্রিমুখী বাকযুদ্ধের ওই ঘটনার পর সে আর সম্পর্ক রাখেনি আমার সঙ্গে। এখনো মুঠোফোনের স্ক্রিনে আসল শরীফ ভাই, যিনি আমার আত্মীয়, তার নামটা যখন দেখি, মনে পড়ে যায় লিমির কথা। যদিও এখন তাকে বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবেও দেখি কাগজে। তবে এতোকিছুর পরও সেই মেয়েটি কেন যেন আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমিও তাকে সত্যিই ভালোবাসতাম। কিন্তু মানুষের মন আসলে এক বিচিত্র জিনিস অথবা হয়তো আমিই বিচিত্র। ওর সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে থাকতেই একইসঙ্গে আরো একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। আমি ওকেও অনেক ভালোবাসতাম। পরে আকস্মিক এক ঘটনায় দ্বিতীয়বারের মতো প্রায় একই কাণ্ড ঘটে। কিন্তু শত চেষ্টার পরও দুজনের কাউকেই বোঝাতে পারিনি, যদিও সেটাই ছিল সত্যি, আমি দুজনকেই সমান ভালোবাসতাম। এটা দ্বিচারণা ছিল না। কসম!
প্রথম প্রকাশ
0 মন্তব্য